যারা প্রথমবারের মতো নেত্রকোনা ভ্রমণে যাবেন তাদের জন্য এই লেখা সহায়ক হবে আশা করি।
আমাদের বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা জেলায় অপরুপ সৌন্দর্য বিদ্যমান। নেত্রকোনা জেলাও এর ব্যতিক্রম নয়। নেত্রকোনা জেলার দর্শনীয় স্থান গুলো নিয়ে আলোচনার আগে চলুন জেলা নেত্রকোনা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নিই।
হাওরের দেশ নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ, মদন, খালিয়াজুড়ি, কলমাকান্দায় কম বেশি ৫৬ টি হাওর ও বিল আছে। যে ৪টি জেলা নিয়ে ময়মনসিংহ বিভাগ গঠিত হয়েছে নেত্রকোনা তার একটি।মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় নেত্রকোনা ১১ নং সেক্টরের অধীন ছিল। নেত্রকোনা ১৯৮৪ সালে জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এই জেলার উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য, দক্ষিণে কিশোরগঞ্জ, পূর্বে সুনামগঞ্জ ও পশ্চিমে ময়মনসিংহ জেলা। মোট ১০টি উপজেলা নিয়ে নেত্রকোনা জেলা গঠিত। এ জেলার পর্যটন দারুন সম্ভাবনাময়।
নেত্রকোনা জেলার দর্শর্ণীয় স্থানসমূহঃ
১.বিরিশিরি কালচারাল একাডেমি।
২.ভারত থেকে নেমে আসা দারুণ সোমেশ্বরী নদী।
৩.চীনামাটির পাহাড়।
৪.সাধু যোসেফের ধর্ম পল্লী।
৫.হাজং মাতা রাশমণি স্মৃতিসৌধ।
৬.দুর্গাপুরের জমিদার বাড়ি।
৭.গারো পাহাড়।
৮.কংস নদী।

বিশেষ নোটঃ নেত্রকোনা ভ্রমনের যাতায়াত সংক্রান্ত আলোচনার আগে বলে নিই আমরা বগুড়া থেকে ভ্রমনে গিয়েছিলাম। তাই ঢাকা থেকে নেত্রকোনা (দূর্গাপুর) ভ্রমনের বিষয়ে যে আলোচনা নিচে করেছি সেটা ইন্টারনেটের বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষন করে ভালো একটা উপায় বের করেছি। তাই ঢাকা থেকে দূর্গাপুর পর্যন্ত রুটের সকল যানবাহনের ভাড়ার ক্ষেত্রে সামান্য তারতম্য হতে পারে, তেমনি তারতম্য হতে পারে গাড়ির সময়ের ক্ষেত্রেও।
ঢাকা থেকে নেত্রকোনা যাওয়ার উপায়ঃ
ঢাকা থেকে বাস যোগেঃ
ঢাকা থেকে সুসং দুর্গাপুরে (নেত্রকোনা) যাওয়ার এবং ফেরার জন্য সবচাইতে ভালো মাধ্যম হবে বাস সার্ভিস। ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে নেত্রকোনার উদ্দেশ্যে দিনে ও রাতে বেশ কিছু বাস ছেড়ে যায়। বেশ কিছু বাস সুসং দূর্গাপুর পর্যন্ত যায়। এই বাস আপনাকে সুসং দুর্গাপুর এর প্রাণকেন্দ্র তালুকদার প্লাজার সামনে নিয়ে নামাবে। ভাড়া পড়বে ৩০০-৩২০ টাকা।
রাত ১২ টায় মহাখালী টার্মিনাল থেকে দিনের সর্বশেষ বাস গুলো ছেড়ে যায়। রাতের শেষ গাড়িতে যেতে চাইলে টিকিট বুকিং দিয়ে রাখতে পারেন,এতে সুবিধা হবে। কারন সাপ্তাহিক বা অন্যান্য ছুটির দিন পর্যটন এলাকায় একটু চাপ থাকে। আবার ঢাকা ফেরার জন্য দুর্গাপুরের প্রাণকেন্দ্র তালুকদার প্লাজার সামনে থেকে রাত এগারটায় এবং সাড়ে এগারটায় দুটি বাস ঢাকার উদ্দ্যশ্যে ছেড়ে যায়। আপনি এখান থেকে টিকিট সংগ্রহ করে বাসে ঢাকা ফিরতে পারেন। ভোর পাঁচটার মধ্যেই ঢাকায় পৌঁছে যাবেন। স্বাচ্ছন্দ্য এবং নিরাপদ ভ্রমনের জন্য এটাই সবচেয়ে ভাল উপায়।
ঢাকা-নেত্রকোনা-দূর্গাপুর রুটে বিআরটিসির কোন বাস সার্ভিস আছে কিনা জানা নেই।
অন্য উপায়েঃ
ময়মনসিংহ হয়েও ভেঙ্গে ভেঙ্গে যেতে পারবেন। তবে এতে ঝক্কি বেশী পোহাতে হবে। বাংলাদেশের যেকোন প্রান্ত থেকে চলে আসুন ময়মনসিংহে। ঢাকা থেকে আসা বেশীর ভাগ বাস মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত যায়। ময়মনসিংহ শহরের যেখানেই নামিয়ে দিক না কেন আপনি নেমে সরাসরি চলে যাবেন ব্রীজ এলাকায়। এই ব্রীজটা মূলত বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু (শম্ভুগঞ্জ ব্রিজ নামে পরিচিত)। রিক্সা/অটোরিক্সা চালকদের বললেই নিয়ে যাবে। ব্রিজের সামনে থেকে নেত্রকোনাগামী বাসে উঠে পড়ুন। সময় লাগবে আড়াই থেকে তিন ঘন্টা। বলে রাখা ভালো রাস্তার অবস্থা খুব একটা ভালো না। এরপর নেত্রকোনা হয়ে সুসং দুর্গাপুরে পৌঁছানোর পর নেমে রিকশায় চলে যান গেস্ট হাউসে। রাস্তা শ্যামগঞ্জ পর্যন্ত খুবই ভাল সুন্দর উন্নত এবং আরামদায়ক। শ্যামগঞ্জ থেকে ৩৫ কিলোমিটার রাস্তা কার্পেটিং ছাড়া। মোটামুটি খানাখন্দ আছে। কারণ ভারি ভারি বালু,পাথর এবং কয়লার ট্রাক চলাচল করে এই রাস্তায়,তাই রাস্তা টেকে না। বাস এর ভাড়া ৮০ টাকা। বাস থেকে সিএনজি ভ্রমন আরামদায়ক। সময় লাগবে দেড় ঘন্টার মতো, ভাড়া ১৫০ টাকা জন প্রতি। এক সিএনজি তে পাঁচ জন উঠতে হয়।
ট্রেনেও যেতে পারেন-
যারা ট্রেনে যেতে চান তাদের জন্য ট্রেনের ব্যবস্থাও আছে। আন্তঃ নগর ট্রেনে ময়মনসিংহ পর্যন্ত যেতে পারেন। ময়মনসিংহ পর্যন্ত রেল এর ভাড়া প্রথম শ্রেণী ১৮০ টাকা, চেয়ার কোচ ১৩০ টাকা এবং শোভন ১১০টাকা। ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত পাঁচটি আন্তঃনগর ট্রেন চলে। কমলাপুর স্টেশন থেকে এগুলো যাত্রা করে। ট্রেন থেকে ময়মনসিংহে নেমে বাসে গেলে উপরোক্ত উপায়ে যাবেন।
আবার যেতে পারেন লোকাল ট্রেন জারিয়া এক্সপ্রেসেও। ময়মনসিংহ ষ্টেশনে নেমে জারিয়া-ঝাঞ্জাইল এর লোকাল ট্রেনে উঠে জারিয়া এসে নামতে হবে। এ রুটে দিনে চারবার ট্রেন চলাচল করে। সকাল ৬ টা,সকাল ১১ টা,বিকাল ৪ টা ও রাত ৮ টায়। ময়মনসিংহ হতে জারিয়া ট্রেন ভাড়া ১৮ টাকা। জারিয়া হতে দুর্গাপুরের ভাড়া টমটমে ২৫ টাকা , সিএনজিতে ৪০ এবং মোটর সাইকেলে ৫০ টাকা জনপ্রতি। (এই রুটে সময়ের ব্যবধানে সকল ভাড়া একটু কম বেশী হতে পারে)।

দূর্গাপুর আসার পর-
থাকার ব্যবস্থাঃ
দূর্গাপুর নামার পর রাতে থাকতে চাইলে সরকারী গেস্ট হাউজে বুকিং দিতে পারেন, তবে এখানে থাকতে সম্ভবত পূর্ব অনুমতি লাগে। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ের গড়ে ওঠা বেশ ভালো ও মোটামুটি মানের হোটেলে থাকতে পারবেন। ভাড়া পড়বে রুম প্রতি ৭০০-৮০০ টাকা,থাকা যাবে ২-৪ জন। বেশী মানুষ একসাথে থাকতে চাইলে ডরমেটরি রুমও ভাড়া পাবেন। ভাড়া বেড প্রতি ২০০টাকা। ভিআইপি রুমের ব্যবস্থাও আছে। তবে আমার মনে হয় নেত্রকোনা ভ্রমনে গিয়ে থাকার কোন প্রয়োজনই নাই। কারন দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখতে রিজার্ভ মটর সাইকেলে ৬-৭ ঘন্টার বেশী লাগবে না। আপনি দিনেই ব্যাক করতে পারবেন। আর এজন্য আপনাকে ভোরে নেত্রকোনা পৌছাতে হবে,এতে করে সন্ধ্যায় ব্যাক করতে পারবেন।
খাবার ব্যবস্থাঃ
এখানে খাবার নিয়ে চিন্তার কোন কারন নেই। যে হোটেলে থাকবেন অনেক সময় সে হোটেলই খাবার সরবরাহ করে। তাছাড়া বাজারের উপর অনেক খাবার হোটেল পাবেন। খাবারের মূল্য স্বাভাবিক।
যানবাহন ব্যবস্থাঃ
এই এলাকার রাস্তাঘাট বেশ ভাঙ্গা। তাই গনপরিবহন কম চলে আর রাস্তা খারাপ হওয়ার কারণে সময়ও অপচয় হয়। এই অঞ্চলের মানুষ অনেকটাই ভাড়া মটর সাইকেলের উপর নির্ভরশীল। তাই আপনাকে মটর সাইকেল রিজার্ভ নিয়ে স্পটগুলো ঘুরতে হবে। চড়তে পারবেন ২জন। রিজার্ভ করার সময় দরদাম করে নিবেন,নইলে ঠকবেন এটা নিশ্চিত! কারণ ভাড়া বেশী চায়। দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরতে ৬ঘন্টার মতো লাগে আর এই সময়ের জন্য মটর সাইকেল রিজার্ভ নিলে ১০০০-১২০০ টাকা নেবে। অটোরিক্সা/রিক্সাও ভাড়া পাওয়া যায়।
আমাদের ভ্রমণযাত্রা ও অভিঙ্গতাঃ
বগুড়া থেকে নিরাপদ ব্যানারে সরকার ট্রাভেলস এর বাস সহ বেশ কিছু গাড়ি ময়মনসিংহে চলাচল করে। ভাড়া ২০০-২৫০ টাকা,তবে ঈদের সময় ভাড়া বেশী নেবে। সকাল থেকেই বাস পাবেন। ময়মনসিংহে আমাদের শম্ভুগঞ্জ ব্রিজে নামিয়ে দিয়েছিল। ব্রীজ থেকে নেত্রকোনাগামী গাড়িতে উঠেছিলাম। ভাড়া নিয়েছিল ৪০ টাকা। নেত্রকোনা বাসস্ট্যান্ডে নেমে অটোরিক্সা করে রাজুর বাজার নামক স্থানে যেতে হবে। ভাড়া ২০ টাকা। বাসস্ট্যান্ড থেকে কলমাকান্দায় বাস যায়, তবে খারাপ রাস্তার কারনে ৩২ কিলোমিটার রাস্তা যেতে ৪ ঘন্টার মতো সময় লাগবে। তাই ঝামেলা এড়াতে এখান থেকে কলমাকান্দাগামী মটর সাইকেল ভাড়া নিয়েছিলাম। ভাড়া জনপ্রতি ১০০ করে। বর্ষাকাল হওয়ার কারনে আমরা কলমাকান্দায় হাওড়ের একটা অংশ দেখতে গিয়েছিলাম, সফলও হয়েছিলাম। উপজেলা সদরের পাশেই বিশাল এলাকা জুড়ে হাওড়ের সৌন্দর্য। যেতে দেরি হবার করানে আমাদের এক রাত কলমাকান্দায় থাকতে হয়েছিল। কলমাকান্দায়ও বেশ উপভোগ্য জায়গা আছে। উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তরে গেলেই সীমান্ত, দুরে মেঘালয়ের পাহাড়ের হাতছানি। পরদিন সকালে কলমাকান্দা বাজার থেকে মোটরসাইকেল রিজার্ভ নিয়ে দূর্গাপুর সদর হয়ে জমিদারবাড়ী ঘুরে চলে গিয়েছিলাম সুনীল সোমেশ্বরী নদীতে। এই পথে আপনি চললে অনেক কিছুই দেখতে পারবেন। পার হতে হবে নৌকায়। যেতে যেতে দেখবেন সোমেশ্বরী নদী থেকে পাথর উত্তোলনের দারুণ দৃশ্য। নদীটা সম্পর্কে এককথায় বলতে গেলে অপূর্ব। সুদুরে দাড়িয়ে থাকা মেঘালয় রাজ্যের পাহাড় স্পষ্ট দেখতে পাবেন, মনের ভিতর অদ্ভুত ভালোলাগা কাজ করবে। নদী পার হয়ে চলে যান বিরিশিরি কালচারাল একাডেমীতে। বিরিশিরি মূলত একটা ইউনিয়নের নাম। এটা দূর্গাপুর থানাধীন।

সেখানকার দৃশ্য অবলোকন করে চলে আসুন চীনামাটির পাহাড়ে। দেশের বৃহত্তম এই চীনামাটির পাহাড় দেখতে অসাধারণ। পরিস্কার নীল জলরাশী। এমন পানি দেখলে আপনার সাতার কাটতে,গোসল দিতে ইচ্ছে করবে। তবে এখানে গোসল করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার সাইনবোর্ড সাটানো আছে! অবশ্য বর্ষাকালে যাবার কারনে আমরা নীলের পরিবর্তে ঘোলা পানি দেখতে পেয়েছিলাম! বেশ কয়েকটি উচু টিলা আছে এখানে। সবগুলো টিলাতেই সাধারণ মাটির পরিবর্তে বিভিন্ন রঙের মাটির অস্তিত্ব, যেমন লাল,হলুদ,সাদা,গোলাপী,কালো,খয়েরী ইত্যাদি। চীনামাটির পাহাড় দেখতে যাবার পথেই দেখতে পাবেন টঙ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া হাজং মাতা রাশমনির স্মৃতিসৌধ।

বিজয়পুর সীমান্তের দিকে একটু গেলেই দেখতে পাবেন উচু পাহাড়। এখানে একটা ওয়াচ টাওয়ার আছে,তবে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারনে বিজিবি এটা বন্ধ করে দিয়েছে। এটা নাকি কমলারও বাগান,তবে আমরা এসব দেখতে পাইনি! আসলে ওটা কমলার সিজন ছিল না। আরো একটু সামনে গেলেই বিজয়পুর সীমান্ত এলাকা। অনেক সময় বিজিবি তাদের চেকপোস্ট পার হবার অনুমতি দেয় না। কারন ভারতের সীমান্তরক্ষীরা নাকি অনেক সময় বাংলাদেশীদের শারিরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে। ক্যাম্পে নেমে অনুমতি নিয়ে সীমান্ত এলাকায় প্রবেশ করুন। কোন মতেই অনুমতি ছাড়া বিজিবি ক্যাম্প চেকপোস্ট অতিক্রম করবেন না, কারন কোন বিপদে পড়লে বিজিবিকেই লাগবে।

আমাদের মটর সাইকেল চালক অনুমতি না নিয়ে চেকপোস্ট ক্রস করেছিল, ফলে আমাদের আর সীমান্তে যাবার অনুমতি দেয়া হয়নি! বিজিবি অবশ্য তাদের ক্যাম্পের সীমান্তমুখী বাগান খুলে দিয়েছিল আমাদের জন্য,আর বলল আমাদের এখান থেকে সৌন্দর্য উপভোগ করেন তবুও সীমান্তে যেতে দেব না! ক্যাম্পের বাধানো ঘাট থেকে অবশ্য ভারত স্পষ্ট দেখা যায়। মাঝখানে শুধু সোমেশ্বরী নদী,ওপাশে ভারতের কাটাতারের বেড়া। বাংলাদেশ অংশে কোন বেড়া নেই। এখানকার ভিউটা দারুন লাগে।
বিজিবি যদি অনুমতি দেয় তবে বাড়তি কিছু দেখতে পারবেন এটা নিশ্চিত। তবে কোনমতেই সীমান্তের নির্দিষ্ট এলাকা অতিক্রম করবেন না। ঘুরতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনবেন না।
আগেই বলেছি সোমেশ্বরী অপরুপ নদী। শীত কালে যখন পানি কম থাকে তখন সোমেশ্বরী নদীতে হাটু পানিতে নেমে হাটা হাটি করবেন,তখন ফিলিংসটা দুর্দান্ত হবে।

বিজয়পুর থেকে ফেরার পথে যাবেন রানিখং এর সাধু যোসেফের খ্রিষ্টান পল্লীতে। এখানে ছাত্রী হোস্টেল, প্রাইমারী-হাইস্কুল,চার্জ সবই আছে। পাহাড়ের উপরে এর অবস্থান। ঘুরে দেখলে ভালো লাগবে। এখানকার আদিবাসী ছাত্র/ছাত্রীদের ভাষা আমরা কিছুই বুঝতে পারিনি!

এখন ফেরার পালা। সময় বুঝে আপনার সুবিধা মোতাবেক বাসস্ট্যান্ডে চলে আসুন এবং টিকিট কেটে গাড়িতে চড়ে পড়ুন।
দুর্গাপুর থেকে ঢাকাঃ
ঢাকায় ফেরার জন্য দুর্গাপুরের প্রাণকেন্দ্র তালুকদার প্লাজার সামনে থেকে রাত এগারটায় এবং সাড়ে এগারটায় দুটি বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। আপনি এখান থেকে টিকিট সংগ্রহ করে বাসে যেতে পারেন। ভোর পাঁচটার মধ্যেই মহাখালী পৌঁছে যাবেন। দুর্গাপুর থেকে ঢাকা ফেরত যাওয়ার সময় ট্রেনে যাওয়ার চিন্তা কখনই করবেননা। ময়মনসিংহ থেকে আপনি কখনো ঢাকার আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট পাবেননা। প্রতিদিন সকাল ৬:২০ মিনিটে সুসং দুর্গাপুরের একবারে প্রানকেন্দ্র উকিলপাড়া মোড় এর তালুকদার প্লাজা/ অগ্রণী ব্যাংক এর সামনে থেকে বিআরটিসি বাস ছাড়ে (নিশ্চিত জানা নেই)।
দুর্গাপুর থেকে বগুড়াঃ
দূর্গাপুর থেকে বগুড়া আসার সরাসরি কোন বাস সার্ভিস নাই। দূর্গাপুর থেকে যেকোন গাড়িতে চলে আসুন নেত্রকোনার ঢাকামূখী বাসস্ট্যান্ডে। এখান থেকে ময়মনসিংহগামী বাসে উঠে পড়ুন। নামিয়ে দেবে ওই শম্ভুগঞ্জ ব্রীজে। নেমেই হাতের বাম পাশে আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল পাবেন। সেখান থেকেই চড়ে পড়ুন বগুড়াগামী বাসে। তবে মনে রাখবেন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর বগুড়ার উদ্দ্যেশ্যে ময়মনসিংহ থেকে কোন বাস ছাড়ে না। অতএব সেভাবেই আপনার ভ্রমন পরিকল্পনা করুন।
মনে রাখবেনঃ
প্রত্যেকটা পর্যটন এলাকা আমাদের জাতীয় সম্পদ। অতএব এর ক্ষতি হয় এমন কিছু করবেন না। পরিবেশ পরিস্কার রাখুন। বেড়াতে গিয়ে সব কিছু চাহিদামতো রাজকীয় পাবেন এ চিন্তা এড়িয়ে চলুন! প্রয়োজনে স্থানীয় মানুষের সহযোগীতা নিন,স্থানীয় মানুষদের সাথে ভালো ব্যবহার করুন। বিপদে পড়লে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ বা ট্যুরিস্ট পুলিশের সহযোগীতা নিন।
ভ্রমন করুন, দেশকে জানুন।
আপনার ভ্রমন হোক নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব।
*আমাদের ভ্রমনের সময়ের আলোকে লেখা। অতএব সময়ের সাথে সব ধরনের ভাড়া, গাড়ির সময় ইত্যাদি পরিবর্তন হতে পারে।
*কোন মতামত বা সংশোধনী কিংবা জিঙ্গাসা থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
©কপিরাইট: আলমগীর হোসেন
TM:JUNE 2018
TD:23-24 (2 nightS 2 days)